নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বহনকারী একটি গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার রাত ২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেইসবুক পোস্টে এ অভিযোগ করেছেন।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদও ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “বান্দরবানের লামায় যাওয়ার পথে রোববার রাত ২টার দিকে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।”
পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, “ঢাকা থেকে বান্দরবানের লামা যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জে হামলার শিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহর। সেখানে তাদের ব্যাগ এবং মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং অনেকেই হামলায় আহত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি বাংলাদেশ সরকারের নিকট।”
ওসি কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ বলেন, “শীতের রাতে কুয়াশা থাকায় ছাত্রনেতাদের বহন করা মাইক্রোবাসটি ধীরগতিতে চলছিল। এ সময় একদল ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র হাতে গাড়িটি থামিয়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙে ছাত্রনেতাদের মোবাইল-মানিব্যাগ লুট করে। গাড়ির কাঁচ ভাঙায় দুজন ছাত্রনেতা আঘাত পেয়েছেন।”
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে এবং পরে অন্য গাড়ি আসলে ছাত্রনেতাদের কয়েকজন ঢাকায় এবং বাকিরা লামার উদ্দেশ্যে রওনা হন বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ওসি বলেন, “ঘটনার ধরন ও বিবরণে ঘটনাটি ছিনতাইকারীদের কোনো দল ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সোনারগাঁ থানা পুলিশ কাজ করছে।”
ঘটনার সময় গাড়িটিতে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা রিমি, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রারিম নীরব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী। তাদের মধ্যে রাকিব মোহাম্মদ ও মাহমুদা সুলতানা আহত হয়েছেন।
সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সোমবার বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি স্মরণসভা ও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। সে উদ্দেশ্যেই রোববার রাতে একটি গাড়িতে করে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা ছাড়েন।”
হামলার সময় গাড়িতে থাকা রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা ঘটনার বর্ণনায় বলেন, “গাড়িতে আমরা আটজন ছিলাম। গাড়িটি যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছিল। এরই মধ্যে চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড়ে মুখ ঢাকা একদল লোক এসে গাড়ির কাঁচ ভেঙে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। হামলাকারীরা তখন গাড়িটির চারপাশ ঘিরে ফেলে।
“তারা চাপাতিসহ হাতে থাকা অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাঁচ ভেঙে আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেয়। একদল হামলাকারী তখন আরিফ সোহেল ভাইকে টেনে-হিচড়ে গাড়ির বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে কোনো কারণে হামলাকারীরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা এসে উপস্থিত হয়।”
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, “গাড়িটি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছিল। পাশেই আমাদের একটি টহল টিম ছিল। তাৎক্ষণিক আমাদের টহল টিম এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরইমধ্যে আমরা ছিনতাইকারীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করেছি।”
Leave a Reply