রবিবার, ২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,
শিরোনামঃ
হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আইভী দুইদিনের রিমান্ডে  নারায়ণগঞ্জে তিন দিনব্যাপী ‘ভূমি মেলার উদ্বোধন  ডেমরা থানা আওয়ামীলীগ নেত্রী কাশিপুর থেকে গ্রেপ্তার  সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি লেক থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার ফতুল্লায় মাদকে সয়লাব নিশ্চুপ প্রশাসন, নেই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান সিদ্ধিরগঞ্জে আব্দুল্লাহ হত্যা মামলায় র‍্যাব ও পুলিশের অভিযানে ৫ জন গ্রেপ্তার  নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত মানবিক সেবা’য় মানবাধিকার সংগঠনের ভূমিকা বিষয়ক আলোচনা ও সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নির্বাচন না দিলে দেশবাসী আবারও গর্জে উঠবে – তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ

ফতুল্লায় মাদকে সয়লাব নিশ্চুপ প্রশাসন, নেই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান

নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জ:

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফতুল্লার রেলস্টেশন ও আলীগঞ্জ এলাকার অন্যতম সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়াল থাবা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেনা যুব সমাজও। এ অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

মাদকের নিষ্ঠুর যাত্রায় কেউ লাখ লাখ টাকার ব্যবসা ধ্বংস করে সর্বশান্ত হয়ে জড়িয়েছেন ভয়ংকর অপরাধ চক্রে। অনেক পরিবার তছনছও হয়ে গেছে।

এসব কারবারে সবচেয়ে বেশী আসক্তি দেখা গিয়েছে উঠতি বয়সের তরুন-তরুনীদের মাঝে। বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাজায় আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা।

এদিকে মাদক পাচারকারীরা মাদক মওজুদের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ফতুল্লার রেলস্টেশন ও আলীগঞ্জ, পিলকুনী এলাকাগুলোকে। ফতুল্লা থেকে আলীগঞ্জ রেললাইনের পাশে বলেই মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে এ অঞ্চলগুলোতে মাদক মওজুদ ও ক্রয় বিক্রয় করে আসছে।

বিশেষ করে ফতুল্লা রেলস্টেশন প্লাটফর্মে, ফতুল্লা কাচাঁবাজার নাছির সেট এর বাড়ি, পিলকুনী ব্যাংককলনী, আলীগঞ্জ কামাড় পট্টি, আলীগঞ্জ রেল সিগনাল, আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় এলাকায়সহ চলছে জমজমাট মাদক ব্যবসা।

নির্বিকার রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত মহল্লায় অভিনব কৌশলে সেবনকারীদের কাছে মরন নেশা হেরোইন, ইয়াবা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পৌঁছে দিচ্ছে।

একদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদাসিনতা অন্যদিকে একাধিক কর্মকর্তার সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় বিশেষ পেশার কতিপয় কর্তাবাবুরা। এলাকার সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় মাদকের বড় বড় চালান এনে নিরাপদে সরবারহ হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফতুল্লা ও আলীগঞ্জের আশপাশসহ এমন কোনো পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে হেরোইন, গাঁজা ও ইয়াবার কারবার না হচ্ছে।

ফতুল্লা ও আলীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকার হেরোইন ব্যবসায়ী নাছির সেট, ব্যাংক কলনী এলাকার সোর্স দ্বীন ইসলাম দ্বীলা, সোর্স মহসিন, আলীগঞ্জ এলাকার সোর্স শান্ত, সল্টু রাসেল, রাজীব, আরমান, ইব্রাহিম, খোকা, হাফিজ, কেপ জুয়েলসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যাবসায়ী ও সেলসম্যানরা অবাধে মাদক বিক্রি করছে যা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা হাত বাড়ালেই পাচ্ছে মরন নেশা ইয়াবা ও হেরোইন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, এক সময় ফতুল্লা থানা পুলিশ ঢাকডোল বাজিয়ে ওপেন হাউজডে পালন করা হতো। সেখানে বিভিন্ন এলাকা হতে আগত সাধারন মানুষগুলো তাদের সমস্যাগুলো উপস্থাপন করতো এবং তা সমাধানে পুলিশ ব্যাপকভাবে কাজ করতো। কিন্তু প্রায় ২/৩ বছর যাবত থানায় ওপেন হাউজডে না হওয়ার ফলে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতে মাদকের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ প্রবনতা বেড়েছে মাত্রাতিরিক্তহারে।

পুলিশের অভিযান টালমাটাল থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। তবে এলাকাগুলোতে মাদক ব্যবসায়ের নেপথ্যের লোকেরা ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যায়।

মাদকের চালানগুলো গ্রহন করে ভাগবন্টন করে নেয় মাদক ব্যবসায়ীরা রাত সাড়ে সাতটা থেকে ৯টার মধ্যে প্রতিটা মহল্লায় মাদক পৌঁছে দেয়, কারণ এ সময় পুলিশ ডিউটি পরিবর্তন করে।

এ সময় রাস্তায় পুলিশের কোনো গাড়ি থাকে না। তার কারণে নির্ভয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক পৌঁছে দিতে কোনো বাধা অতিক্রম করে না বলে জানায় এলাকাবাসী।

এদিকে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় যুব সমাজের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।

এতে করে সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে ব্যাপকভাবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক দেখানো অভিযানে কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে পুরোদমে আবার শুরু হচ্ছে মাদক পাচার ও বিক্রি।

ইদানীং হেরোইন ও ইয়াবা ব্যবসায় কিশোর বয়সের ছেলে ও নারীরা জড়িয়ে পড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফলে সমাজে ধীরে ধীরে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে

করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, কয়েকদিন পূর্বে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ দেখতে পেলাম যে, ফতুল্লা থানায় একমাসে ১ কেজি গাজাঁ উদ্ধার যা সত্যিই হাস্যকর। তারা বলেন, শুধুমাত্র ষ্টেশন এলাকায় রশিদ পুলিশের ছেলে দীন ইসলাম ওরফে ডাকাত দীন ইসলাম।

রেলষ্টেশনের প্লাটফর্মে প্রতিদিন যে পরিমানে গাজী বিক্রি করছে তা অকল্পনীয়। সাথে তার বোবা ভাই-বোনও প্রকাশ্যে গাজাঁ বিক্রি করছে।

আর দীন ইসলামের এ মাদকের সাথে সরাসরি জড়িত বিশেষ পেশার এক ব্যক্তি যিনি নাকি দীন ইসলামকে মাদক বিক্রির পুরো পুজি দিয়েছেন আর লভ্যাংশের মোটা অংশও নিচ্ছেন উক্ত বিশেষ পেশার ব্যক্তি।

তারা আরও বলেন, যে কিশোর গ্যাংয়ের উদ্ভব হয়েছে প্রতিটি এলাকায়- তার নেপথ্যের প্রধান কারণই হল মাদকের সহজলভ্যতা।

চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক শেল্টারে কিশোরদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করাচ্ছে বলেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে কিশোর গ্যাংয়ের লড়াই হচ্ছে, খুনের মতো ঘটনা ঘটছে।

এদিকে মাদক ও কিশোগ্যাং এর বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে নিয়মিত অভিযান চালালেও রহস্যজনক কারনে অধরা থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা।

তারা বলেন, সেখানে তারা (পুলিশ) বলে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষনা করেছে তাই আমরাও মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

আসলে তাদের এ কথা গুলো কাগজে কলমে বাস্তবে তা নয়। মাঝে-মধ্যে কয়েকটি চালান র‍্যাবের হাতে ধরা পরলেও নির্বিকার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

খবরটি সবার সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরও খবর...।