নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জঃ
ফতুল্লার পাগলা মুন্সিখোলার একটি পরিত্যক্ত দোকান ঘর থেকে বশির (৪০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বশিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, নিহতের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকায় তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ পাগলা মুন্সিখোলাস্থ ওই পরিত্যক্ত দোকান ঘর থেকে নিহত বশিরের লাশ উদ্ধার করে। বশির ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা জেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের মেয়ে জানায়, সকাল ১০টার দিকে তার বাবা বাসা থেকে বের হন। বের হওয়ার সময় তিনি শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করেছিলেন, মেয়ে কিছু খাবে কিনা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই লোকমুখে তারা জানতে পারেন, বাবার লাশ দোকানের ভেতর পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ দেখে মেয়ের দাবি—এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তিনি অভিযোগ করেন, তার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং পাশের দোকানের লোকজনই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ ফতুল্লা থানা পুলিশের একাধিক দল বেলা ১২টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেছেন, ঘটনাস্থলের পাশের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে তারা দেখতে পান, সকাল ১০টার দিকে নিহত বশির প্রথমে পরিত্যক্ত ওই দোকান থেকে একটি লোহার রড নিয়ে বের হন। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা পর তিনি দ্রুত দৌড়ে আবার সেই পরিত্যক্ত দোকান ঘরে প্রবেশ করেন। এরপরেই তার মৃতদেহ উদ্ধারের খবর আসে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহতের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, নিহত বশীর একজন মাদকাসক্ত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামানও জানান, নিহত বশির মাদকাসক্ত ছিলেন বলে তারা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন।
লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।”
Leave a Reply