কোতয়ালী থানা সুত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে রাতে যশোরের বকচর হুশতলা গ্রামের শান্তা কিন্ডার গার্ডেন নামক এলাকায় জনৈক শান্তা রানী কুন্ডুর দ্বিতীয় তলা বাসার নীচ তলার ভাড়াটিয়া মৃত হোসেন আলী গাজীর ছেলে ঔষধ ব্যবসায়ী জহির হাসান গাজীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ, ডিবি ও র্যাব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ওইসময় মৃত জহির আলীর বাম হাতের প্রতিটি শিরায় কালো দাগ পরিলক্ষিত হওয়ায় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ঘটনাটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় যশোর জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এঁর নির্দেশে কোতোয়ালি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে নিবিড়ভাবে তদন্ত শুরু করেন। নিহত জহির হাসান গাজীর স্ত্রী শেফালী বেগমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বামী জহির হাসানকে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে জানান যে, শংকরপুরের রবিউলের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের কারণে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী জহির হাসানকে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিনব পদ্ধতিতে প্রথমে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে পূর্ব থেকে সংগৃহীত মোবাইল ব্যাটারীর এসিড ইনজেকশন সিরিঞ্জে ভরে ঘুমন্ত জহির হাসানের বাম হাতের শিরায় পুশ করেন। শরীরে এসিড প্রয়োগের অল্প সময়ের মধ্যে জহির মৃত্যুবরণ করে মর্মে শেফালী স্বীকার করেন। পরবর্তীতে শেফালীকে গ্রেফতার ও তার স্বীকারোক্তিতে হত্যার রহস্য গোপন করার আলামত ভাঙ্গা মোবাইল, ব্যাটারীর অংশ বিশেষ, নিহতের ঘর থেকে এবং মনিহার ফলপট্টি রোড থেকে হত্যাকাজে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ঘুমের ঔষধের খালিপাতা এবং আসামীর কর্মস্থল মাতৃসেবা ক্লিনিক থেকে নমুনা সিরিঞ্জ ও ঘুমের ঔষধ জি-ডায়াজিপাম ৫ মিলিগ্রাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনা সংক্রান্তে নিহতের ভাই গাজী শাহনেওয়াজ বাদী হয়ে বুধবার (১০মে) কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৩৬।
এব্যাপারে কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, পরকীয়ার কারণে অভিনব পদ্ধতিতে স্বামী জহির হাসানকে হত্যা করায় স্ত্রী শেফালী বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে বুধবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।