নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জ:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী রোববার। বন্যাপীড়িত অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি এবার তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে পালন করছে।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বন্যার কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ৬ দিনের কর্মসূচি কমিয়ে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন (১ সেপ্টেম্বর) অনাড়ম্বরভাবে পালন করা হবে।
তিনি বলেন, দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এবারের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ সেপ্টেম্বর সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলের কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বাদ আসর সারাদেশে বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘবে এবং সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহতদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একই সাথে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দেশে ফিরে আসতে পারেন সেজন্য আমরা দোয়া চাইবো। বিএনপির এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খরচের অর্থ বন্যার্তদের জন্য গঠিত ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সবাইকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এখন গণতন্ত্রকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে। আইনের শাসন, মতপ্রকাশ, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই দেড়যুগব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান সার্থক হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক বাংলাদেশকে নিপীড়ন-নির্যাতনসহ সব পৈশাচিকতা মুক্ত একটি সুস্থির-শান্তিময় নাগরিক অধিকার সুরক্ষার দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
দেশজুড়ে যেন আর কখনোই গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টাকা পাচারের মতো ঘৃণ্য বিভীষিকার পুনরাবৃত্তি না হয়। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সামনে মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশে একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়া। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করা। পাশাপাশি দৃঢ় জনমত তৈরি করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো–দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল ও সন্দেহ-সংশয় ও সমন্বয়হীনতা পাশ কাটিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকা। সে লক্ষ্যে এরমধ্যেই কাজ শুরু করেছে দলটি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চার ইস্যুতে সর্বাধিক মনোযোগ বিএনপির। এগুলো হচ্ছে -আন্দোলনে হতাহতদের খোঁজ নেওয়া এবং সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপকভিত্তিক ত্রাণ বিতরণ; জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি; নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করা।
১৯৭৮ সালের এক সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীদের ‘যূথবদ্ধ শক্তিমঞ্চ’ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। দল গঠনের পর থেকে, বিএনপি যথাক্রমে ১৯৭৯ এবং ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পাশাপাশি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে।