নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শান্তিধারা এলাকায় বৈধ মালিকানাধীন জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া ও প্রায় ১০ লাখ টাকারও বেশি নির্মাণসামগ্রী লুটের অভিযোগ উঠেছে এক সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী মো. জসিম উদ্দিনসহ জমির ১৩ জন অংশীদার পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৮–২০ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে যাদের নাম এসেছে তারা হলেন— মো. হারুনুর রশিদ (৬০), এনামুল হক লিটন (৫০), মো. আরিফ ভূঁইয়া (৩২), মো. হান্নান মিয়া (৪৮) ও মো. অর্ণব (৩৮)।
অভিযোগকারী জানান, শান্তিধারা এলাকার মোট ১৮.৪৬ শতাংশ জমি তাদের বৈধ মালিকানাধীন। বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেখানে ইট, বালু, সিমেন্ট, রডসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী মজুদ রাখা হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেওয়া হয় সিকিউরিটি গার্ড। এরই মধ্যে অভিযুক্ত হারুনুর রশিদসহ চক্রটি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল বলে অভিযোগকারীদের দাবি।
চাঁদা না দেওয়ায় পরপর হুমকি, ভয়ভীতি ও জমি দখলের চেষ্টা তীব্র হতে থাকে। অভিযোগকারী জসিম উদ্দিন বলেন, “ভূমিদস্যু হারুনুর রশিদ এবং গণঅধিকার পরিষদের নগর নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আমার জমি দখলের চেষ্টা করছে।”
গত ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে, অভিযুক্ত পাঁচজনসহ অজ্ঞাত ১৮–২০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেন। নিরাপত্তা প্রহরী আবুল হোসেন কারণ জানতে চাইলে তাকে মারধরের চেষ্টা করা হয়। তারা হুমকি দেয়— ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে কোনো নির্মাণ কাজ করা যাবে না।
এরপর মালিকপক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই চক্রটি নিরাপত্তা প্রহরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ১০ লাখ ৯২ হাজার টাকার নির্মাণসামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিল—১০ টন রড (মূল্য প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা),২০০ বস্তা সিমেন্ট (মূল্য ১ লাখ টাকা),টিনের বেড়া ও লোহার গেট,মালামাল পরিবহনে ২টি পিকআপ ও ৪টি ভ্যান ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া প্রাচীর ও দেওয়াল ভেঙে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
হামলার সময় অভিযুক্তরা জানায়— “চাঁদা না দিলে জমিতে কোনো স্থাপনা হতে দেওয়া হবে না, কেউ কাজ করতে এলে তাকে হত্যা করা হবে।”
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেহানুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তদের থানায় আসতে বলা হলেও তারা আসেনি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”