নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জ:
ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাটে উঠছে কোরবানির পশু। সড়কপথের পাশাপাশি প্রতি বছর নদীপথে এসব পশু ট্রলারযোগে হাটগুলোতে তোলেন ব্যাপারীরা। নদীপথে আসা এসব ট্রলার শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদীতে আটকে জোর করে গরু নামিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (২ জুন) নারায়ণগঞ্জের একাধিক এলাকায় জোর করে গরু নামিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গরু নামিয়ে রাখার জন্য সন্ত্রাসীরা ট্রলার ও স্পিডবোট ব্যবহার করছেন।
ব্যাপারীরা বলছেন, প্রায় প্রতিবছরই তাদের এমন ঝামেলায় পড়তে হয়। জোর করে কোরবানির জন্য বিক্রি করতে আনা গরু ও ছাগল নামিয়ে রাখায় কাক্সিক্ষত হাটে যেতে পারছেন না তারা। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সড়কপথের পাশাপাশি নদীপথেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানোর দাবি তাদের।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কিশোরগঞ্জসহ আশেপাশের জেলা থেকে প্রতিদিনই নদীপথে ট্রলারে করে কোরবানির পশু নারায়ণগঞ্জে আনা হচ্ছে। এসব ট্রলার বিভিন্ন ঘাটে পৌঁছানোর আগেই মাঝনদীতে বা নদীর পাশে আটকে গরু নামিয়ে রাখছে একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা এই কাজ করছেন। এতে করে গরু খালাসে বাড়তি সময় ও খরচ লাগছে। এমনকি চুক্তি করা হাটেও যেতে পারছেন না ব্যাপারীরা।
ব্যাপারীদের অভিযোগ, এবারের ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে নদীপথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা কম থাকায় সন্ত্রাসী জোর করে গরু নামিয়ে রাখছেন। নদীর মাঝখানে স্পিডবোট ও ট্রলার দিয়ে পশুবাহী ট্রলার থামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সন্ত্রাসীদের পছন্দমতো হাটে গরু নামানো হচ্ছে।
সোমবার বন্দর উপজেলার কাইতাখালী এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে স্পিডবোটের মাধ্যমে একদল সন্ত্রাসী একটি কোরবানির পশুবাহী ট্রলার নদীর মাঝখানে থামায়। পরে ট্রলারটির গতিমুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে।
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায় ঢাকার পোস্তগোলা এলাকার একটি হাটে যাবার পথে নারায়ণগঞ্জের নদীপথে গরুবাহী ট্রলার আটকায় একদল সন্ত্রাসী। তারা জোর করে গরু নামিয়ে রাখে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো কার্যকর নজরদারি নেই বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, “আমাদের পুলিশের কাজ ভাগ করা আছে। জেলা পুলিশ সড়কপথের বিষয়গুলো দেখছে এবং নৌপথের বিষয়গুলো দেখছে নৌ পুলিশ সদস্যরা। নৌপথে জোর করে গরু নামিয়ে রাখার বিষয়গুলো আমাদেরও নজরে এসেছে। আমরা নৌ পুলিশের সাথে কথা বলেছি। এগুলো বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তারা নেবেন।”
“এছাড়া, সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে। নিয়মিত টহল আরও জোরদার করা হবে। আগামীকাল থেকে বিষয়গুলো দৃশ্যমান হবে। তাছাড়া, সদর ও বন্দর থানা পুলিশকে বিশেষভাবে নজারদারি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে”, যোগ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।