প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২০, ২০২৫, ৬:৪২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ৫:২৩ অপরাহ্ণ
ডিবি পরিচয়ে লিংক রোডে ডাকাতির ঘটনায় ৪ জন গ্রেপ্তার

নিউজ ২৪ নারায়ণগঞ্জঃ
ঢাকা নারায়গঞ্জ লিংক রোডে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে এবং তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ‘জেএস ট্রাভেলস’-এর একটি বাস ফতুল্লা থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় যাত্রী নামানোর পর গন্তব্যের দিকে রওনা হয়। ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে ভূঁইগড় পাসপোর্ট অফিসের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছালে চারজন দুষ্কৃতিকারী বাসটিকে সিগন্যাল দেয় এবং নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে বাসের দরজা খুলতে বলে।
বাসের সুপারভাইজার ও ড্রাইভার তাদের বাসে উঠতে দিলে তারা ড্রাইভারের পাশে বসে ৩-৪ মিনিট কথা বলার পরই তাদের আসল রূপ প্রকাশ করে। দুষ্কৃতিকারীরা গাড়ির যাত্রীদের মারধর করে তল্লাশি শুরু করে এবং তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ও মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী আফরোজা আক্তার এনি (৩৩) ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের করা এজাহারে জানান, দুইজন দুষ্কৃতিকারী তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগটিতে তার ব্যবহৃত এক জোড়া স্বর্ণের হাতের রুলি, এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, একটি টেকনো স্মার্ট ফোন, একটি স্যামসাং বাটন মোবাইল সেট এবং নগদ ২০ হাজার টাকা ছিল। দস্যুতার পর তারা দ্রুত সাইনবোর্ডের দিকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় ১১ সেপ্টেম্বর একটি মামলা (নং-২৪) রুজু করা হয়।
পুলিশ জানায়, মামলা রুজুর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন’র দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “ক” সার্কেল মো. হাসিনুজ্জামান-এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ জহিরুল ইসলাম তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। তদন্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত চারজনকে ফতুল্লা ভূঁইগড় এলাকা থেকে গত ১৭ অক্টোবর ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, আরিফুল হক সোহান (৩৪), মো. হৃদয় আহম্মেদ (২৬), মোঃ সজীব ইসলাম (৩০), আমির হোসেন সরদার (৫০) (লুণ্ঠিত মালামাল ক্রেতা)
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি রাজু (৪০), আরিফুল হক সোহান, মো. হৃদয় আহম্মেদ ও মো. সজীব ইসলাম বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করত। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটনার দিন সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে এসে স্টাফ পরিচয় দিয়ে জেএস পরিবহনের গাড়িটিতে ওঠে। এরপর ড্রাইভার ও সুপারভাইজারকে ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের দেওয়া ভাড়ার টাকা নিতে চায়। তারা যাত্রীদের মারধর করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ভূঁইগড় ওভার ব্রিজের নিচে এসে গাড়ি থামিয়ে তারা নেমে যায় এবং লুণ্ঠিত মালামাল ও টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। আসামি রাজু ও আরিফুল হক সোহান লুণ্ঠিত একটি মোবাইল ফোন চোরকারবারী আমির হোসেন সরদারের কাছে বিক্রি করে, যা পরবর্তীকালে শিল্পী বেগমের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ৪ জন আসামিকে গত ১৮ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে, তন্মধ্যে ৩ জন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
Copyright © 2025 news24narayanganj. All rights reserved.